সে আমার অপ্রকাশিত কবিতার পঙক্তি; সে আমার অসম্পূর্ণ নাটকের মুখ্য চরিত্র, আমার মানস মঞ্চে সে সর্বদা উপবীত, কল্পনার শূন্য থিয়েটারে আমার আনুরক্তি; নাটকের শেষ অঙ্কে সে-ই আমার হন্তা।
সে একাকী বিকেলবেলার অকারণ বিষণ্ণতা, সে খোলা নীল আকাশ, সাদা মেঘ ভাসায় প্রকৃতি যেথায়, সেথায় মুক্তির আশায় আমার খাঁচায় বন্দি পাখির নিরন্তর ব্যর্থ নিনাদ।
সে আমার বামুনের না পাওয়া চাঁদ, সে আমার মনের ভিতরে থাকা না বলা অশেষ কথোপকথন, সময়ে অসময়ে আপন কর্ণকুহরে সে আমার সশব্দের হৃদস্পন্দন।
সে বালি দিয়ে গড়া ভাস্কর্য সময়ের সমুদ্রতটে, যা বিরামহীন ঢেউয়ের পুনরাবৃত্তির প্রেক্ষাপটে নিষ্ঠুর সমুদ্রের থাবা ভেঙে দেয় প্রতিবারে।
নিয়তির লিখন বদলাতে কে পারে? তাই হয়ত সে আমার চিরকালের না পাওয়া, তবুও তাকে নিয়েই মনে মনে হাত ধরে প্রজ্বলিত পলাশের কল্পবনে মুক্ত বিহঙ্গের মত হারিয়ে যাওয়া।
ব্যাকুল হৃদে সে আমার না শোনা গান; তার আমার মাঝে লক্ষ যোজন ব্যবধান, মনের সুগভীর কোনে লুকিয়ে থাকা সে আমার অচেনা অভিমান।
সে গ্রীষ্মের মাটিফাটা রোদ্দুরে আমার মূক হৃদয়ের শূন্য অন্দরে দাবদাহে চৌচির জমিনে অনাসৃষ্টি, সে কালবৈশাখীর মেঘ থেকে না হওয়া বৃষ্টি; যার আশে মন চাতক ঘুরে ফেরে করে হাহাকার।
তার নান্দনিকতার কাছে আমি বড়ো কদাকার; রীতিনীতির বিভাজনে আমি চিরকালের পর, তাই দমকা বাতাসে সে আমার তাসের ঘর।
তবু মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে রুপোলী চাঁদের স্নিগ্ধ আলোছায়ায় আকুল মন আমার ভেসে আসা বাতাসে না থাকা তার হাসনুহানার সুবাসে। আমার কলঙ্কীনী চাঁদকে সঙ্গ দিতে তারারা নেই নীল ঘাসের উপর মুখথুবড়ে পড়া সবুজ আকাশে।